বাংলাদেশে বেশ কিছু জনপ্রিয় ড্রিংস প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে কিছু স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী, আর কিছু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের। নিচে কিছু জনপ্রিয় ড্রিংসের তালিকা দেওয়া হলো:
স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী ড্রিংস:
- বোরহানি: দই, পানির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে তৈরি একটি জনপ্রিয় বেভারেজ, যা সাধারণত বিয়ে বা উৎসবের খাবারে পরিবেশন করা হয়।
- লাচ্ছি: দই, চিনি, ও পানি মিশিয়ে তৈরি একটি ঠাণ্ডা ও মিষ্টি পানীয়।
- বেল শরবত: বেল ফলের রস, চিনি ও পানি দিয়ে তৈরি একটি স্বাস্থকর ড্রিংস।
- আলু বুখারা শরবত: শুকনো আলু বুখারা ফলের রস দিয়ে তৈরি একটি জনপ্রিয় পানীয়।
- আম পোড়া শরবত: পোড়া কাঁচা আম, চিনি ও লবণ মিশিয়ে তৈরি শরবত, যা গরমকালে অনেক জনপ্রিয়।
জনপ্রিয় কোমল পানীয়:
- কোকা-কোলা: আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় এই কোমল পানীয় বাংলাদেশেও খুবই জনপ্রিয়।
- পেপসি: কোকা-কোলার মতোই জনপ্রিয় আরেকটি কোমল পানীয়।
- স্প্রাইট: লেবুর স্বাদের কোমল পানীয়, যা বিশেষ করে গরমকালে প্রচলিত।
- ৭ আপ: স্প্রাইটের মতোই একটি লেবু স্বাদের পানীয়।
- মিরিন্ডা: কমলা স্বাদের কোমল পানীয়, যা ছোট থেকে বড় সবাই পছন্দ করে।
জনপ্রিয় জুস:
- ফ্রুটিকা: ম্যাঙ্গো, অরেঞ্জ সহ বিভিন্ন ফ্লেভারের জুস।
- আফ্রুটিনো: বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস, যা অনেক জনপ্রিয়।
- ডলসি: ম্যাঙ্গো জুস, যা বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী ড্রিংস:
- গোলাপ শরবত: গোলাপের পাঁপড়ি থেকে তৈরি রসের সঙ্গে চিনি ও পানি মিশিয়ে তৈরি একটি জনপ্রিয় শরবত।
- জলজিরা: জল, জিরা (জিরার গুঁড়া), চিনি ও লবণ মিশিয়ে তৈরি একটি রিফ্রেশিং ড্রিংস।
- সাতু: সাতু গুঁড়া, চিনি ও ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এটি অনেক পুষ্টিকর এবং বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে জনপ্রিয়।
- ডাবের পানি: কাঁচা ডাবের পানি, যা প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি এবং অত্যন্ত পুষ্টিকর।
জনপ্রিয় কোমল পানীয়:
- মাউন্টেন ডিউ: লেবু ও লেমনের মিশ্রণে তৈরি একটি শক্তিশালী কোমল পানীয়।
- আরসি কোলা: আরেকটি জনপ্রিয় কোলা ব্র্যান্ড, যা কোকা-কোলা ও পেপসির প্রতিযোগী।
- ট্যাং: পাউডার ফর্মে পাওয়া যায়, যা পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এবং বিভিন্ন ফ্লেভারে পাওয়া যায়।
জনপ্রিয় জুস:
- ম্যাজিক জুস: ম্যাঙ্গো, অরেঞ্জ, আপেল সহ বিভিন্ন ফ্লেভারের জুস।
- স্লাইস: ম্যাঙ্গো জুস, যা বিশেষ করে গরমকালে জনপ্রিয়।
- রুহ আফজা: একটি বিশেষ ধরনের সেরাপ, যা বিভিন্ন ফল, ফুল ও ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি এবং শরবত হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
জনপ্রিয় দুধভিত্তিক পানীয়:
- মিল্ক শেক: বিভিন্ন ফ্লেভারের মিল্ক শেক, যেমন চকলেট, স্ট্রবেরি, ভ্যানিলা ইত্যাদি।
- ফ্রুট মিল্ক শেক: ফলের সাথে দুধ ও চিনি মিশিয়ে তৈরি শেক, যেমন ম্যাঙ্গো শেক, কলা শেক ইত্যাদি।
- রাবড়ি: দুধ, চিনি ও কাজু-কিসমিস মিশিয়ে তৈরি একটি ঘন এবং মিষ্টি পানীয়।
জনপ্রিয় চা:
- লেবু চা: লেবু ও চিনি মিশিয়ে তৈরি চা, যা হালকা ও রিফ্রেশিং।
- মাল্টা চা: মাল্টা ফলের সঙ্গে চা পাতা মিশিয়ে তৈরি করা হয়।
- মালাই চা: ঘন দুধ ও চিনি মিশিয়ে তৈরি একপ্রকার চা, যা মিষ্টি এবং ঘন।
আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের ড্রিংস:
- রেড বুল: একটি জনপ্রিয় এনার্জি ড্রিংস, যা কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়।
- মন্স্টার এনার্জি: আরেকটি এনার্জি ড্রিংস, যা বিভিন্ন ফ্লেভারে পাওয়া যায়।
- গেটোরেড: একটি স্পোর্টস ড্রিংস, যা বিশেষ করে খেলোয়াড় ও অ্যাথলেটদের জন্য জনপ্রিয়।
এই সব ড্রিংস বাংলাদেশে সহজেই পাওয়া যায় এবং নানা ধরনের লোকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে।
স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী ড্রিংস:
- গোলাব পানি: গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি থেকে তৈরি একটি পানীয়, যা সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রিয়।
- তাল শাঁসের শরবত: কাঁচা তালের শাঁস থেকে তৈরি করা একটি মিষ্টি পানীয়, যা গ্রীষ্মকালে বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
- তেঁতুলের শরবত: তেঁতুল, চিনি, লবণ ও পানি মিশিয়ে তৈরি একটি তীক্ষ্ণ স্বাদের ড্রিংস।
- গোলাপ লাচ্ছি: দই, গোলাপ সিরাপ ও চিনি মিশিয়ে তৈরি লাচ্ছির একটি ভিন্ন সংস্করণ।
জনপ্রিয় কোমল পানীয়:
- ডিউ: লেবুর স্বাদের কোমল পানীয়, যা বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয়।
- লিফট আপ: কমলালেবু স্বাদের কোমল পানীয়, যা কিছুটা স্পার্কলিংও হয়।
- ইস্পাহানি: বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভারের কোমল পানীয়।
- জিরা পানীয়: জিরা স্বাদের পানীয়, যা হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য খাওয়া হয়।
জনপ্রিয় জুস:
- প্রাণ জুস: বাংলাদেশি ব্র্যান্ড প্রাণের বিভিন্ন ফ্লেভারের জুস, যেমন ম্যাঙ্গো, অরেঞ্জ, আপেল ইত্যাদি।
- নেসলে জুস: বিভিন্ন ফলের ফ্লেভারের জুস, যা স্বাদ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর।
- ড্যাব্লুডি জুস: বিভিন্ন ফলের ফ্লেভারের জুস, যা বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয়।
জনপ্রিয় দুধভিত্তিক পানীয়:
- চকলেট দুধ: চকলেটের স্বাদযুক্ত দুধ, যা ছোট থেকে বড় সবাই পছন্দ করে।
- কেশর দুধ: কেশর, দুধ ও চিনির মিশ্রণে তৈরি একটি বিশেষ পানীয়।
- বাদাম দুধ: দুধ ও বাদাম মিশিয়ে তৈরি একটি পুষ্টিকর পানীয়, যা বিশেষ করে শীতে পান করা হয়।
জনপ্রিয় চা:
- মশলা চা: বিভিন্ন মসলা যেমন আদা, এলাচ, দারচিনি ইত্যাদি মিশিয়ে তৈরি করা হয়।
- গ্রিন টি: স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিদের মধ্যে জনপ্রিয়, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
- আদা চা: আদার সঙ্গে চা পাতা মিশিয়ে তৈরি করা হয়, যা ঠাণ্ডা-কাশিতে উপকারী।
অন্যান্য জনপ্রিয় পানীয়:
- ক্যাফে ল্যাটে: কফির সঙ্গে দুধ মিশিয়ে তৈরি একটি জনপ্রিয় কফি পানীয়।
- ফ্র্যাপুচিনো: ঠাণ্ডা কফি, দুধ ও আইসক্রিম মিশিয়ে তৈরি একটি পানীয়।
- কোল্ড কফি: ঠাণ্ডা দুধ ও কফি মিশিয়ে তৈরি একটি রিফ্রেশিং পানীয়।
- হট চকোলেট: চকলেট, দুধ ও চিনির মিশ্রণে তৈরি একটি গরম পানীয়।
জনপ্রিয় হেলথ ড্রিংস:
- অর্গানিক জুস: অর্গানিক ফল ও সবজির রস থেকে তৈরি জুস।
- স্মুদি: বিভিন্ন ফল, দই ও অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে তৈরি একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়।
- প্রোবায়োটিক ড্রিংস: দই বা কেফির থেকে তৈরি পানীয়, যা হজমশক্তি উন্নত করে।
- ডিটক্স ওয়াটার: বিভিন্ন ফল ও সবজি মিশিয়ে তৈরি পানি, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
ঋতুভিত্তিক বিশেষ পানীয়:
- গ্রীষ্মকালীন পানীয়: যেমন তরমুজের রস, কাঁচা আমের শরবত, আইস টি ইত্যাদি।
- শীতকালীন পানীয়: যেমন খেজুরের রস, মালাই চা, গরম চকোলেট ইত্যাদি।
এই সব ড্রিংস বাংলাদেশে প্রচলিত ও জনপ্রিয় এবং বছরের বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন উৎসবে মানুষের পছন্দের তালিকায় থাকে।
Post a Comment